07/06/2025
সময়ের সীমানা: অধ্যায় ২ যুদ্ধের ছায়া
সময় ভ্রমণ কাহিনি

সময়ের সীমানা: অধ্যায় ২ যুদ্ধের ছায়া

May 21, 2025

গল্পের নাম : সময়ের সীমানা
এপিসোড ২ : যুদ্ধের ছায়া
ধরন : বাংলা সায়েন্স ফিকশন থ্রিলার ।

অধ্যায় ২: যুদ্ধের ছায়া

পূর্ব আকাশে সূর্য এখনো পুরোপুরি ওঠেনি, কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে রাত আর দিন একই রকম—ধোঁয়া, কাদা আর মৃত্যুর গন্ধে বিভোর। মাটির উপর গড়িয়ে উঠে দাঁড়াতে গিয়ে ড. ফারহান বুঝতে পারলেন, তিনি আর নিজের যুগে নেই।

একটি অপরিচিত জগত

চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পোড়া তাঁবু, ভাঙা অস্ত্র, আর ঝলসে যাওয়া পোশাক জানান দেয়, এটি একটি সামরিক সংঘর্ষের কেন্দ্রস্থল। কিন্তু কে কার বিরুদ্ধে লড়ছে? কোন সাল? কোন দেশ? তার কিছুই পরিষ্কার না।

তার গলার কাছেই এখনও ঝুলে আছে ChronoShift, কিন্তু স্ক্রিনে ঝলকাচ্ছে লাল সতর্কবার্তা—
“Temporal Anchor Lost. Manual Reset Required.”

তার বুকের মধ্যে শীতল স্রোত বয়ে যায়। ফিরে যাওয়ার পথ এখন কেবল প্রযুক্তিনির্ভর নয়, সময়ের স্রোতের বিপরীত দিকে এক নিঃসঙ্গ যাত্রা।

প্রথম মুখোমুখি

একটি হালকা শব্দ পেছন থেকে আসতেই ফারহান ঘুরে দাঁড়ালেন।
এক যুবক, বয়স কুড়ির আশেপাশে, হাফপ্যান্ট আর ধুলোমাখা জামায়, হাতে ব্রিটিশ স্টাইল রাইফেল। চোখে ভয় আর কৌতূহল।

“Tumi ke? Ekhane ki korchho?” সে জিজ্ঞেস করলো, কণ্ঠে অচেনা উপভাষার টান।

ফারহান থমকে গেলেন। উত্তর দেওয়ার আগেই তার পাশে দাঁড়ালো আরও দুইজন—একজন ঘোমটা পরা নারী, আরেকজন ছেঁড়া পোশাকে, হাতে কাস্তে।

“Ei manush amar dekha nai… aghater proshikkhito nirdesh chara keu ekhane ashte pare na,” যুবকটি বললো।

ফারহান শান্তভাবে উত্তর দিলেন, “Ami ekjon gobeshok… ami bhule ekhane chole eshechi…”

কিন্তু কথাটা শেষ হওয়ার আগেই তার গলায় ঝুলন্ত যন্ত্রটির দিকে নজর গেল সবার।

সন্দেহের ছায়া

“Eta ki? Wireless transmitter? Radio bomb?”
“Britisher pashe jorito?”

এই সন্দেহ বাষ্প হয়ে জমতে থাকল চারপাশে। অজানা মানুষ, অজানা যন্ত্র—যেকোন সময় বিপদ ঘটতে পারে।

বন্ধন নাকি বাঁচার পথ?

তাকে চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হলো একটি পরিত্যক্ত বাঙ্কারে। ভেতরে আরও কয়েকজন মানুষ—সবাই হয় কৃষক, নয়তো বিপ্লবী। একজন অল্পবয়সী ছেলেকে দেখা গেল বুলেট ক্ষতের যন্ত্রনায় কাঁপছে। পাশের প্রাচীরে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে কিছু হাতে লেখা লিফলেট, রক্তে মাখানো।

এক বৃদ্ধ এসে বললেন,
“Tumi jodi amader dushman na hoye thako, tahole amader proman dao. Ei juger jonno tumi onek boro rahoshyo.”

ফারহান বুঝলেন, তার সময় ফিরে যাওয়ার আগে তাকে প্রমাণ করতে হবে তিনি শত্রু নন।
এবং হয়তো, এই সময়ের কিছু মানুষই হবে তার একমাত্র আশ্রয়।

যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে

বাইরে গুলির শব্দ বাড়তে থাকে। কেউ চিৎকার করে জানায়—”Angrez Camp theke hamla suru hoyeche!”

ড. ফারহান জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখেন—অগ্নিশিখার মধ্য দিয়ে কিছু সৈন্য ছুটে আসছে। তার বুকের ভিতর হঠাৎ একটা তীব্র অনুভূতি—এই যুদ্ধের সঙ্গে তার ভবিষ্যৎ জড়িয়ে যাচ্ছে।

পরিণতি: বিশ্বাস গড়ার শুরু

একটা সময় ভ্রমণ কেবল বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা ছিল, কিন্তু এখন তা এক জীবন-মৃত্যুর বাস্তবতা।
এই নতুন যুগে ফারহান শুধু একজন সময়পর্যটক নন, বরং এক সংঘর্ষের মাঝখানে পড়ে যাওয়া এক অজানা খেলোয়াড়।

পরবর্তী পর্বে:

এপিসোড ৩: অতিথি নাকি গুপ্তচর?
— ফারহান কীভাবে স্থানীয়দের বিশ্বাস অর্জন করবেন? ChronoShift কী ধীরে ধীরে কাজ করছে? আর সত্যিই তিনি কি ইতিহাসের গতিপথে প্রভাব ফেলছেন?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *