
এক কিশোরের সাধারণ জীবন | অদ্ভুত ছায়া পর্ব ১
গল্পের নাম : অদ্ভুত ছায়া।
এপিসোড ১ : এক কিশোরের সাধারণ জীবন।
ধরন : বাংলা সায়েন্স ফিকশন থ্রিলার ।
চরিত্র পরিচিতি: আরিয়ান – এক কিশোরের সাধারণ জীবন
আরিয়ান একটি সাধারণ শহরের সাধারণ স্কুলের ছাত্র। বয়স সতেরো। উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগে পড়ে। স্বভাবতই কৌতূহলী, একটু একলা ধরনের, কিন্তু মেধাবী এবং প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহী।
সে মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপ করে, ইউটিউবে মাঝে মাঝে ভিডিও দেয়, এবং পুরনো প্রযুক্তি বা ফিজিক্সের অদ্ভুত প্রশ্নে ডুবে থাকতে ভালোবাসে।
তার বন্ধুবান্ধব খুব বেশি নেই – মূলত তিনজন:
- রাফি – মজার, হাসিখুশি, গেমার
- তাহমিনা – যুক্তিবাদী, অলরাউন্ডার, বিজ্ঞানপ্রেমী
- জুনায়েদ স্যার – স্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক, যিনি আরিয়ানকে উৎসাহ দেন ভিন্নভাবে চিন্তা করতে
অদ্ভুত ঘটনার সূচনা
দিনটা ছিল সোমবার
স্কুল শেষে বাসায় ফেরার পথে আরিয়ান হাঁটছিল শহরের পুরনো লাইব্রেরির পাশ দিয়ে। হঠাৎ তার মনে হলো, কেউ তার পেছনে ছায়ার মতো চলেছে। সে থেমে পেছনে তাকাল, কিন্তু কিছুই দেখতে পেল না।
তবে রাস্তার মোড়ে থাকা সিসিটিভির দিকে তাকিয়ে হঠাৎ তার চোখ আটকে গেল। স্ক্রিনে তাকে দেখানো হচ্ছে, কিন্তু তার পাশে আরও একজন – দেখতে হুবহু তার মতো। পোশাক ভিন্ন, কিন্তু মুখ, গড়ন, হাঁটার ভঙ্গি – সবকিছু একই।

আমি যখন আমাকে দেখি
পরদিন, স্কুলে যাওয়ার পথে আবারও সে ছেলেটিকে দেখে – দূরে দাঁড়িয়ে, তাকিয়ে আছে একদৃষ্টিতে।
আরিয়ান ভয় পায় না, বরং কৌতূহলী হয়ে ছেলেটির দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু সে হঠাৎ করেই উধাও হয়ে যায়। যেন ধোঁয়ার মতো মিলিয়ে গেল।
সে জুনায়েদ স্যারের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করে। স্যার হেসে বলেন, “এটা নিশ্চয়ই কাকতালীয়। মানসিক চাপেও এমন বিভ্রম হতে পারে।”
কিন্তু আরিয়ান জানে, এটা কাকতালীয় নয়। কিছু একটা ঘটছে।
পুরনো ডায়েরি ও ছায়ার সংকেত
বাসায় ফিরে সে তার বাবা মারা যাওয়ার আগের রেখে যাওয়া কিছু পুরনো বই ঘাঁটতে থাকে। একটি নোটবুক পায় – যেখানে লেখা কিছু বৈজ্ঞানিক নোট, কোটেশন আর অদ্ভুত আঁকা-আঁকি।
এক জায়গায় লেখা:
“তুমি একা নও, প্রতিটি সিদ্ধান্তে তৈরি হয় আরেক তুমি। প্রশ্ন হলো, কে তোমার জায়গা নিতে চায়?”
আরিয়ান হিম হয়ে যায়। এসব কী? এই ডায়েরির লেখাগুলো কেবল বৈজ্ঞানিক নয়, মনে হচ্ছে, কোনো ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা।
প্রথম ইঙ্গিত: পৃথিবীটা কি একটাই?
গভীর রাতে, আরিয়ান কম্পিউটারে “মাল্টিভার্স”, “alternate self”, “shadow doppelgänger” এসব বিষয়ে রিসার্চ করতে থাকে।
সে দেখে একাধিক গবেষক বিশ্বাস করেন, প্যারালাল ইউনিভার্স তত্ত্ব শুধুই তত্ত্ব নয় – সময়, মহাকর্ষ, কোয়ান্টাম স্থিতি – সবই এই ধারণাকে মেনে নেয়।
আরিয়ান ভাবে,
“যদি সত্যিই আমার আরেকটা ভার্সন কোথাও থাকে… তাহলে সে এখানে কী করছে?”

শেষ দৃশ্য: ছায়া যখন সামনে আসে
পরের দিন সন্ধ্যায় ছাদে উঠে ছিল আরিয়ান। হঠাৎই এক ঝলকে দেখে – তার মতো আরেকজন দাঁড়িয়ে আছে পাশের বিল্ডিং-এর ছাদে।
এবার সে হাসে। এবং বলে,
“তোমাকে সময় থাকতে চিনতে পারলে ভালো হতো, আরিয়ান।”
তারপর অদৃশ্য হয়ে যায়।
পরবর্তী পর্বের ইঙ্গিত:
এপিসোড ২: মুখোমুখি অপরিচিত আমি
আরিয়ান অবশেষে সামনা-সামনি দাঁড়াবে তারই অন্য ভার্সনের সঙ্গে। কে এই ব্যক্তি? তার উদ্দেশ্য কী?
আর, সে কীভাবে পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে?
পরবর্তী পর্বে: সত্য ও ভয় একসঙ্গে মুখোমুখি হবে।