
সময়ের সীমানা: অধ্যায় ৩ অচেনা মুখ, অজানা আস্থা
গল্পের নাম : সময়ের সীমানা।
এপিসোড ৩ : অচেনা মুখ, অজানা আস্থা।
ধরন : বাংলা সায়েন্স ফিকশন থ্রিলার ।
পূর্ববর্তী পর্বের সংক্ষিপ্ত কাহিনী (Recap):
ড. ফারহান টাইম মেশিনের একটি ভুলের কারণে ১০০ বছর পেছনে চলে যান—একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলার মাঠে। আধুনিক পোশাক ও হাতে ধরা এক অজানা যন্ত্র দেখে তাকে সন্দেহের চোখে দেখে স্থানীয়রা। এক তরুণ রাইফেল হাতে তার মুখোমুখি হয়। কিছু বলার আগেই একদল মানুষ এসে ফারহানকে বন্দি করে। তার টাইম মেশিন অকেজো। এখন তাকে বেঁচে থাকতে হলে সময় নয়, মানুষের আস্থা অর্জন করতেই হবে।
অধ্যায় ৩: অচেনা মুখ, অজানা আস্থা
ড. ফারহান এক নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি
চোখে কাপড় বাঁধা, হাত রশিতে বাঁধা। ড. ফারহান জানে না কতদূর হেঁটেছে। পায়ে কাঁটা, মাটির খোঁচা, গায়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়া বাতাসের গন্ধও নতুন। অবশেষে থামে। চোখ খুলতেই দেখে—এক কাঁচা মাটির ঘরে, চারপাশে কাঠের অস্ত্র, হুকোমুখো লোকজন।
সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে বিজ্ঞানী
“তুমি কে?”—একজন কড়া গলায় বলে।
“আমি একজন বিজ্ঞানী। আমি… আমার সময় থেকে এসেছি।”
বাক্য শেষ করার আগেই কেউ বলে ওঠে, “ভন্ডামি কোরো না। তুমি কি ইংরেজদের গুপ্তচর?”
ফারহান বুঝে যায়, এরা একদল স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কিংবা বিদ্রোহী। সময়টা ১৯২৫–২৬। সুভাষ বোস ও অন্যান্য নেতাদের আন্দোলনের সময়।
“তোমার সঙ্গে থাকা যন্ত্রটা কী?”
“ওটা… যোগাযোগের যন্ত্র। আমার গবেষণার অংশ।”
তারা তা বিশ্বাস করে না। ডিভাইসটি তুলে কেউ একজন বলে, “এটা বিস্ফোরকও হতে পারে। আমাদের কমান্ডারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

এক অচেনা মেয়ে, প্রথম সহানুভূতি
তাদের মধ্যে একজন মেয়ে, বয়স খুব বেশি না—২০–২২। চোখে তীক্ষ্ণতা, কিন্তু মুখে আগ্রহ।
সে ফারহানের দিকে এগিয়ে আসে।
“তোমার নাম কী?”
“ফারহান আহমেদ।”
“তুমি শহুরে লোক, বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু তোমার ভয় নেই… আমি ততটা নিষ্ঠুর নই।”
তার নাম শিউলি। সে বলে, “তোমার ভাষা আর দৃষ্টি অন্যরকম। আমি বুঝতে পারছি তুমি মিথ্যে বলছো না।”
পরীক্ষা শুরু
রাতের দিকে, তাকে একটা পরীক্ষার মধ্যে ফেলা হয়—এক ভাঙা রেডিও সারাতে বলা হয়। সেটা ব্রিটিশ সেনাদের শোনার জন্য ব্যবহৃত হতো। ফারহান সময় নিয়ে তা ঠিক করে ফেলে।
“তুমি যদি সত্যি গুপ্তচর হতে, তাহলে আমাদের এত কিছু শেখাতে না,”—বলে শিউলি।

সম্পর্কের সূচনা, অবিশ্বাস এখনো আছে
শিউলির সাহায্যে কিছুটা আস্থা তৈরি হয়, তবে অধিকাংশ যোদ্ধা এখনো সন্দেহ করে।
“আমরা দেখব, তুমি কতদিন ভালো মানুষ থাকতে পারো”—এটাই বলে একজন যোদ্ধা।
রাতের আকাশে তখনও পুরনো ধাঁচের বাতাস। টাইম মেশিন কাজ করছে না।
শুধু একটা কাগজে, ফারহান লিখে রাখে—
“Trust is the only machine I have now.”